ইন্দুবালা ভাতের হোটেল-কল্লোল লাহিড়ী

খাবার নিয়ে আমাদের সবার অনেক স্মৃতি আছে। আনন্দের, বেদনার, সম্পর্কের শুরু অথবা শেষ। একটা খাবার শুধু কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি একটা রেসিপিই না, এর সাথে যুক্ত থাকে ভালোবাসা আর মায়া জড়ানো কিছু স্মৃতি।

খুলনার মেয়ে ইন্দুবালার হয়তো এতো কিছু জানতে হয়নি ঐটুকু বয়সে। ছেনুমিত্তির লেনে বহু বছর ধরে ভাতের হোটেল চালানোর সময়ও হয়তো এতো কিছু ভাবেননি ইন্দুবালা। কিন্তু আমরা পাঠকেরা তার প্রতিটি রান্নার সাথে পেড়িয়ে এসেছি অনেকটুকু পথ। খুলনায় মা-ঠাকুরমার করা রান্না অথবা কলকাতার ছেনু মিত্তির লেনে শাশুড়ির কাছে দেখা ওপারের নানারকম পদ, সবটা ঘিরে রয়েছে আমাদের ইন্দুবালার জীবন।

সেই যে ছোট বয়সে বিপত্নীক, মাতাল একজনের সাথে বিয়ে হলো, অল্প বয়সে তিন সন্তান নিয়ে বিধবা হওয়ার পর থেকে এই আজকের দিন পর্যন্ত; ইন্দুবালার জীবনযুদ্ধে দেশভাগ, মুক্তিযুদ্ধ, নকশাল আরও কতো ইতিহাস আর রাজনীতির রদবদল হলো। চাওয়া পাওয়ার হিসাবে পাওয়ার খাতা হয়তো শূন্য, সেই না পাওয়ার বেদনাও তিনি বাক্সবন্দী করে রাখেন স্মৃতির আলমারিতে।

ভীষণ মায়া জড়ানো একটা বই, শেষ করলেও রেশ থেকে যাবে ইন্দুবালার রান্নার মতোই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top